কলঙ্কিত ২১ আগস্ট ও বর্তমান প্রেক্ষিত
আজ ২১ আগস্ট। দেশের ইতিহাসের একটি কলঙ্কিত দিন। আজ থেকে ১৫ বছর আগে এই দিনে সুপরিকল্পিতভাবে ঠাণ্ডা মাথায় সমাবেশে নির্বিচারে গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যার হীন উদ্দেশ্য, তা ছিল প্রতিহিংসা ও নৃশংসতার এক চরমতম বহিঃপ্রকাশ। বিস্ময়ের ব্যাপার, প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশের উপস্থিতি সত্ত্বেও গ্রেনেড নিক্ষেপকারীরা পালিয়ে গেল। ভয়ের নাটক সাজিয়ে দৃষ্টি সরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারেও পাওয়া গেল পাকিস্তান নির্মিত আর্জেস গ্রেনেড। সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া শেখ হাসিনাকে চিঠি পাঠিয়ে আহ্বান জানালেন, ‘গণতন্ত্রকে সংহত করতে আসুন একসঙ্গে কাজ করি।’ একই সঙ্গে খালেদা জিয়াসহ বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা শুরু করল গণতন্ত্রের জন্য মায়াকান্না। আরো বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, একদিকে তিনদিন পর তদন্ত হলো এবং সঙ্গে সঙ্গে দেশবাসীর অজ্ঞাতে অবিস্ফোরিত গ্রেনেডের ওপর হাতের ছাপ সংরক্ষণ না করে বিনষ্ট করে ঘোষণা করা হলো সুনির্দিষ্টভাবে তথ্য প্রদান করতে পারলে ১ কোটি টাকা পুরস্কার। তারপর গ্রেনেড হামলার তদন্তে ঢাকায় আসে এফবিআই ও ইন্টারপোল, যা ছিল সুস্পষ্ট প্রহসন। আরো আগ্রহোদ্দীপক ব্যাপার হচ্ছে, ৭ দিনের মধ্যে পাল্টা সমাবেশ ও বক্তৃতার মধ্য দিয়ে বিএনপি শুরু করেছিল ‘ব্লেমগেম’-এর ঘৃণ্য খেলা। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারে দুই প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ‘সুযোগ্য পুত্র’ তারেক রহমান ও হারিস চৌধুরীসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় হয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে হত্যার নাটক শুরু হয়েছিল দেশের বাইরে বৈরুতে সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর ভেতর দিয়ে। পল্টনের জনসভায় হত্যার অভিযোগ করেছিলেন শেখ মুজিব। অভিযোগ তদন্ত করার সাহস চিহ্নিত ওই ক্ষমতাসীন সাম্প্রদায়িক অপশক্তির হয়নি। কিন্তু শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে জুটেছিল মামলা ও জেল। দেশের স্বাধীনতার জন্য বারে বারে ফাঁসির দড়ির সামনে থেকে ফিরে এলেও এই মহানায়কের শেষ রক্ষা হয়নি। গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল বাংলার প্রান্তরের মতো তাঁর প্রশস্ত ও উদার হৃদয়। জাতীয় চার নেতাকেও তারা বন্দি অবস্থায় করেছিল হত্যা। স্বঘোঘিত খুনিদের বিচার পরাজিত ওই অপশক্তি করেনি বরং তাদের ভাগ্যে জুটেছিল রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। আর পঁচাত্তরের পর শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে দৃশ্যমান ১৯ বার প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছে। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে সব প্রচেষ্টা। তাই কতটা প্রতিহিংসার বারুদ জমা হয়ে আছে পরাজিত প্রতিক্রিয়ার, তা অনুমান করা কঠিন নয়।
রাজনীতির অভিজ্ঞতা বলে, ক্ষমতায়ই থাকুন বা বিরোধী দলেই থাকুক জনপ্রিয় কোনো দলের প্রধান নেতাকে হত্যা করতে হলে পরিবেশ ও পরিস্থিতি সৃষ্টি এবং ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনার ছক করতে হয়। আকস্মিকভাবে তা করা হয় না। কেননা এর সঙ্গে একদিকে থাকে গণরোষের সম্ভাবনা আর অন্যদিকে থাকে ক্ষমতা দখল বা কুক্ষিগত ও নিরঙ্কুশ করার উদগ্র আকাক্সক্ষা। আমরা যদি একটু খেয়াল করি তবে দেখা যাবে, দেশের প্রতিটি বড় বড় রাজনৈতিক হত্যার সঙ্গে জড়িত হয়ে আছে অনুকূল পরিবেশ-পরিস্থিতি ও ঠাণ্ডা মাথার পরিকল্পনা। ঘটনাপ্রবাহ পর্যালোচনা করে নিঃসন্দেহে প্রমাণ করা করা যাবে, বঙ্গবন্ধু হত্যার ছক ছিল নিম্নরূপ। পাকিস্তানের ফাঁসির সাজানো মঞ্চ থেকে ফিরে এসে বঙ্গবন্ধুর প্রথম উপহার ছিল সংবিধান ও সংসদীয় গণতন্ত্রের বাংলাদেশ। এই উপহারকেই ওরা ব্যবহার করে একদিকে সরকারের তীব্র বিরোধী ‘রাতের বাহিনী’ আর সরকারি লেভেল আঁটা ‘চাটার দল’-এর অপতৎপরতা শুরু হয়েছিল। সুচতুরভাবে লক্ষ্য ছিল সরকার ও সরকারি দলের ভেতরে অবিশ্বাস-দ্বন্দ্ব এবং বাইরে অরাজকতা-বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে সংকট সৃষ্টি করে গণতন্ত্রের মানসপুত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে অগতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী প্রমাণ করা। আপ্রাণ ও অন্তহীন প্রচেষ্টা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু সংসদীয় গণতন্ত্র দিয়ে সরকার পরিচালনার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বন্যা ও খাদ্য জাহাজ নিয়ে ষড়ষন্ত্র আর সেই সঙ্গে বাসন্তীকে জাল পরানোসহ নানা অপপ্রচার ও মিথ্যা প্রচার পরিস্থিতিকে অবনতির দিকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল।
ওই দিনগুলোতে তখনকার বিশ্বব্যবস্থার টানে একদলসহ আরো কিছু পদক্ষেপ নিয়ে যখন পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে থাকে, দ্রব্যমূল্য তথা চালের দাম নিম্নমুখী হতে থাকে, তখনই বিবেচনায় আসে প্রতিক্রিয়ার চূড়ান্ত আঘাত। পরিবারে বঙ্গবন্ধু হন নিহত। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগকে একেবারেই নেতৃত্বশূন্য করতে জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে নিয়ে যাওয়া ও হত্যা করাও ছিল ঠাণ্ডা মাথার পরিকল্পনা। আজ এত দিনে এত অভিজ্ঞতার পর বলতেই হয় যে, আওয়ামী লীগকে দিয়ে (মোশতাক ও তার মন্ত্রিসভা) আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার পরিকল্পনাও ছিল সেই নীলনকশারই অংশ। যেন সিনেমার দৃশ্যের মতো একে একে খালেদ মোশাররফের ক্যু থেকে শুরু করে ৭ নভেম্বর তথাকথিত ‘বিপ্লব’ আর গায়ের জোরে সেনাশাসক জিয়ার ক্ষমতা দখলের ঘটনা ঘটে চলছিল। এখানে লক্ষ করার মতো রয়েছে দুটি বিষয়। এক. আওয়ামী লীগের ভেতরেই ছিল যেমন থাকে সর্ষের মধ্যে ভূত। দুই. দেশি-বিদেশি বৈরী শক্তির অভাবিত ঘটনার সুযোগ গ্রহণ।
অবস্থাদৃষ্টে অনুধাবন করা যাবে, রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক সংকটের চরিত্র হয় দুই রকম। দৃশ্যমান ঘটনাপ্রবাহের ভেতর দিয়ে সৃষ্টি হয় সংকট আবার আকস্মিক অভাবিত ঘটনাও সৃষ্টি করে সংকট। কে জানত ১৯৭৪ সালে এতটা প্রলয়ঙ্কারী বন্যা হবে! এটাও কি কল্পনার মধ্যে কারো ছিল যে, চুক্তির খাদ্য জাহাজ অন্যত্র পাঠানো হবে! বলাই বাহুল্য, দৃশ্যমানটা শাসনে রাখা সম্ভব কিন্তু অভাবনীয়টা মোকাবেলা করা কঠিন ও জটিল। এই জন্যই সরকার পরিচালনায় রিস্ক ফ্যাক্টরগুলোকে যথাসম্ভব আগে থেকেই বিবেচনায় রেখে ব্যবস্থা রাখার রেওয়াজ রয়েছে। জাতির দুর্ভাগ্য, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে নতুন পরিস্থিতির মধ্যে এসব কাজ করা সম্ভব হয়নি। একটা বিষয় এখানে বিবেচনায় নিতেই হবে যে, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সাথীরা আওয়ামী লীগ দলকে গোছানো ও স্বাধীন দেশ পরিচালনার উপযোগী প্রশাসন গড়ে তোলার জন্য সময় পেয়েছিলেন খুবই কম। আইয়ুবের সামরিক শাসন উঠে যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু জেলে বাইরে ছিলেন খুব কম সময়ই। আর পাকিস্তানের রেখে যাওয়া বেসামরিক ও সামরিক প্রশাসন দিয়ে এবং এমনকি পাকিস্তান থেকে আগতদের আত্তিকরণ করে শুরু হয়েছিল নবোজাত দেশটির যাত্রা। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে গেছে, সরকারে থেকে কর্মসূচি বাস্তবায়নের উপযোগী দল ও প্রশাসন সৃষ্টি ও ক্রমোন্নতি না করে, রিস্ক ফ্যাক্টরগুলোর সামাল দেয়ার মতো সম্ভবমতো ব্যবস্থা না রেখে অগ্রসর হলে পরাজিতদের ‘প্রাইম টার্গেটকে’ রক্ষা করা অসম্ভব।
বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যার পর আরো একটি বড় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এখানে আলোচনা করতেই হয়। নতুবা অভিজ্ঞতা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। সময় নিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় সব দিক গুছিয়ে মহাশক্তিধর অপ্রতিদ্বন্দ্বী জিয়া শুরু করেছিলেন সরকার পরিচালনা। ক্যু-পাল্টা ক্যু, হুকুমের নির্বাচন ও হত্যা দিয়ে ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করতে চেয়েছিলেন। ক্ষমতা ব্যবহার করে ক্লিন ইমেজ নিয়ে ক্লিন দল গঠন করতে প্রয়াসী হয়েছিলেন। দ্রব্যমূল্য, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু স্বাভাবিক কারণেই দল হয়ে উঠেছিল সুযোগসন্ধানী সুবিধাবাদী লোকদের আখড়া। সব ক্ষেত্রে হলেন ব্যর্থ। ফলে সামরিক সাথীদের নিয়ে গড়ে ওঠা ক্ষমতার কেন্দ্রে অসম্ভাবীভাবে সৃষ্টি হয়েছিল ভাঙন। বিদ্রোহী সেনানায়ক জিয়ার সাথী মঞ্জু ও তার সাঙ্গোপাঙ্গদের চট্টগ্রাম পাঠিয়ে তিনি ছিলেন প্রশান্তিতে। কিন্তু দলের সমস্যা! গেলেন চট্টগ্রামে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জর্জরিত দল সামলাতে। সেখানে গিয়েই এই সেনাশাসক জীবন দিলেন। নিয়তির অদৃশ্য পরিহাস, যে পথ ধরে তিনি এসেছিলেন সেই পথেই হলেন শেষ। ‘ছেঁড়া গেঞ্জি’ ও ‘ভাঙা স্যুটকেস’ এখন যেন এক সিনেমার গল্প। এই হত্যাকা- প্রমাণ করে গেছে, বাঁধন যতই হবে শক্ত, ততই তা টুটবে।
যে দিন থেকে শেখ হাসিনা দেশে এসেছেন, ঘটনাপ্রবাহ প্রমাণ করে সে দিন থেকেই তিনি হচ্ছেন পরাজিত শক্তির ‘প্রাইম টার্গেট’। ক্ষমতায় যখন তিনি ছিলেন না, তখন হত্যা করার জন্য ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনা মতো পরিবেশ ও পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করা হতে থাকে। শেখ হাসিনার জীবন নিতে ছোট-বড় নানা প্রচেষ্টা নিয়ে ‘বাঘ আসছে, বাঘ আসছে’ ধরনের গা সওয়া পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়। বিভিন্ন জনপ্রিয় স্থানে ও জমায়েতে বোমা-গ্রেনেড চালিয়ে এবং এমনকি ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর বোমা হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া কী রকম হতে পারে, তা পরীক্ষা করা হয়। ‘বাংলাভাই মিডিয়ার সৃষ্টি’ বলাটাও ছিল নীলনকশারই অংশ। তারপর এক সময় হানা হয় চূড়ান্ত আঘাত। আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন প্রাণ দিলেও শেখ হাসিনার জীবন ছিনিয়ে নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে এখনো যে বসে নেই জাতিসত্তার শত্রু ও প্রতিহিংসাপরায়ণ পরাজিতরা, এটা বোধকরি বলার অপেক্ষা রাখে না।
এখন ১১ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। ২০০৯-১৪ আওয়ামী লীগ শাসনামলে বিডিআর বিদ্রোহ ও দুবার আগুন-সন্ত্রাসের ভেতর দিয়ে গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যার উদ্দেশ্য ছিল ঘোলা পানিতে মাছ শিকার তথা ‘প্রাইম টার্গেটকে’ আঘাত। কিন্তু তা সফল হয়নি। তবে ২০১৪ সালের পর থেকে দেশের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো দৃশ্যমান বা আকস্মিক রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক বড় কোনো সংকট দানা বেঁধে ওঠেনি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রেখে জনগণের অর্থনৈতিক জীবনের ক্রমোন্নতি এমনটা হওয়ার কারণ। কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে জানা গেল, দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে ২০১৯ সালে জিডিপি বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ প্রথম শতকরা ৮ ভাগ, ভারত দ্বিতীয় শতকরা ৭.২ ভাগ এবং পাকিস্তান ষষ্ঠ শতকরা ৩.৯ ভাগ হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বর্তমানে অর্থনৈতিক বড় কোনো সমস্যা-সংকট না থাকলেও ব্যাংক ও ব্যাংকে সঞ্চয়পত্র সুদের হার কমানো নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। সামাজিক দিক থেকে মশা নিধনে কর্তৃপক্ষের অবহেলা বিবেচনায় ডেঙ্গুজনিত কারণে মানুষের মধ্যে রয়েছে শঙ্কা-হতাশা। সর্বোপরি ধর্ষণ ও দখল দাপট এবং তাতে ক্ষমতাসীন নামধারীদের যুক্ত থাকা ও মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জোর প্রচারণায় সাধারণ মানুষ হচ্ছে বিভ্রান্তি ও ক্ষুব্ধ। ভোট ও গণতন্ত্র নিয়েও আছে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন প্রশ্ন। বর্তমান সময়ে কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার কাজটাও জটিল ও কঠিন। এই অবস্থায় উগ্রবাম বলছে সরকার ডানে ঝুঁকছে, আওয়ামী লীগ আওয়ামী মুসলিম লীগ হয়ে গেছে আর প্রতিক্রিয়াশীল ডান বলছে ঠিক উল্টো কথা। এই অবস্থায় কোনো দৃশ্যমান বা অভাবিত অর্থনৈতিক ও সামাজিক বড় সংকট যদি রাজনৈতিক রূপ পায় কিংবা রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়, তবে কিন্তু আবারো হত্যা-খুনের পরিবেশ-পরিস্থিতি দানা বেঁধে ঘনীভূত হওয়ার অবস্থা দাঁড়াতে পারে। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে, যখন-তখন নাকি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের দরজা খোলা থাকবে। এদিকে কেন্দ্রে না থাকলেও তৃণমূলে রয়েছে দলীয় কোন্দল এবং বিভিন্ন স্থানে জামায়াত-বিএনপির ‘কাউয়ারাও’ আওয়ামী লীগে ঢুকে পদ-পদবি পেয়ে যাচ্ছে। ‘অরিজিনাল’-‘কাউয়া’ মারামারিও হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদককে কেবল কথায় নয় কাজে সর্বশক্তি নিয়োগ করে সর্বোচ্চ সতর্কতা দিয়ে দলকে গুছিয়ে জনগণের ক্ষুব্ধতা-হতাশা দূর করার পদক্ষেপ নিয়ে ‘প্রাইম টার্গেট’ রক্ষার কাজ করা ভিন্ন বিকল্প আর কিছু নেই। ছোবল আনার মতো বিন্দুমাত্র কোনো সুযোগ দেয়া যাবে না, এটাই হোক শোকের মাসে ২১ আগস্ট কলঙ্কিত দিনের একান্ত কামনা।
শেখর দত্ত: রাজনীতিক ও কলাম লেখক।
মূল লেখাটি দৈনিক ভোরের কাগজে প্রকাশিত: লিঙ্ক