পরীক্ষায় পাস ও শিক্ষার মান নিয়ে ভাবনা
এবার উচ্চ মাধ্যমিকে পাসের হার বেড়ে ৭৩ দশমিক ৯৩ হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৭ হাজার ২৮৬ জন। গ্রেডিং পদ্ধতির প্রথম বছর ২০০৩ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাঁচ লাখ পরীক্ষার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ গ্রেড জিপিএ-৫ পেয়েছিল মাত্র ২০ জন। পাসের হার ছিল ৩৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ১৬ বছরের মাথায় এবার অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় পাসের হার যেমন বেড়েছে, তেমনি জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা চলে এসেছে প্রায় অর্ধলাখে। ২০১৮ সালে পাসের হারের তুলনায় বেড়েছে ৭ দশমিক ২৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ এক বছরে বেড়েছে ১৮ হাজার ২৪ জন। কমেছে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠান ও বেড়েছে শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও। এ বছর একজনও পাস করতে পারেনি এ রকম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪১টি, গত বছর যা ছিল ৫৫। এ ক্ষেত্রে শূন্য পাস করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৪টি। অর্থাৎ এবারের ফল সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর ‘সন্তোষজনক’ শব্দের সার্থকতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে সহজেই। ফলের চিত্র বলছে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট ইউনিটের (বেডু) অধীনে খাতা মূল্যায়নে কঠোর ও কার্যকর পদ্ধতি চালুর পর পাসের হার বৃদ্ধিতে ছেদ পড়লেও এবার ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে পরীক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এমন ফলের কারণ কঠোর মনিটরিংয়ে শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত শিক্ষা নিশ্চিত করা ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিয়মিতকরণ। অন্যদিকে এক বছরের ব্যবধানেই ফলের এমন চিত্রের মূল কারণ হচ্ছে ইংরেজি ও আইসিটিতে পাসের হার বৃদ্ধি। প্রতিবছর মূলত এ দুটি বিষয়ে বেশি শিক্ষার্থী ফেল করার কারণে মোট পাসের হার কমে যায় ব্যাপকভাবে। এবার দুটি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ভালো ফল পাল্টে দিয়েছে সার্বিক চিত্র। পাশাপাশি মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষার্থীদের ব্যাপক পাসের হার প্রভাব ফেলেছে ফলাফল চিত্রে। আবার শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা করে ভালো প্রস্তুতি ও নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ বেড়েছে বলা চলে। বলা হচ্ছে, প্রশ্নপত্র সহজ বা কঠিন করায় পাসের হারে প্রভাব পড়েনি। শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করে ভালো প্রস্তুতি নিয়েছিল বলেই ভালো ফল হয়েছে। আমরা আশা করছি, এই শিক্ষার্থীরাই উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।
২.
দুই দশক আগে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ছাত্রদের দিয়ে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার চিন্তা করেছেন। ১৯৯৪ সালে তার লিখিত ‘শিক্ষিত জনশক্তি অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত’ শীর্ষক প্রবন্ধে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে বাস্তবমুখী করে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন তিনি। দেশের উৎপাদনমুখী কর্মকা-ের সঙ্গে শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের যথাযথভাবে সম্পৃক্ত করাই তার লক্ষ্য ছিল। প্রতিটি ছাত্র যাতে তাদের নিজস্ব স্বাভাবিক মেধা-মনন, ক্ষমতা ও প্রবণতা অনুযায়ী পেশা বেছে নিতে পারে, তার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন। সে সময় তার প্রত্যয়দৃপ্ত উচ্চারণ ছিলÑ ‘শিক্ষাঙ্গনে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আমরা বদ্ধপরিকর।’ আসলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা বিরাজ করলে তা প্রতিবিধানে তিনি সব সময়ই উদ্যমী ভূমিকা পালন করেছেন। ওই প্রবন্ধে তিনি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দিয়ে নিরক্ষরতা দূর করার কথা বলেছিলেন। ছাত্রদের কাজে লাগানোর তার সেই স্বপ্ন রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর ভিন্ন আঙ্গিকে সম্পন্ন হয়েছে। উপরন্তু তিনি ফেল করা হতাশ শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভেবেছিলেন। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের দেশের সম্পদ উৎপাদনে ও গঠনমূলক কাজে নিয়োজিত করার কথা লিখেছেন। সময়োপযোগী ও বাস্তবমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করে তাদের সমাজের দায়িত্ববান নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার কথা ছিল তার লেখায়। দুই দশক আগের এসব ভাবনার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে রাষ্ট্র পরিচালনায়। গত মহাজোট সরকারের অন্যতম কীর্তি জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন। ‘শিক্ষানীতি ২০১০’-এ ছাত্রদের চরিত্র গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। শিক্ষানীতির ‘শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য’ তিন অংশে বলা হয়েছেÑ ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করে তোলা ও তাদের চিন্তাচেতনায় দেশাত্মবোধ, জাতীয়তাবোধ এবং তাদের চরিত্রে সুনাগরিকের গুণাবলি (যেমন : ন্যায়বোধ, অসাম্প্রদায়িক চেতনাবোধ, কর্তব্যবোধ, মানবাধিকার সচেতনতা, মুক্তবুদ্ধির চর্চা, শৃঙ্খলা, সৎ জীবনযাপনের মানসিকতা, সৌহার্দ্য, অধ্যবসায় ইত্যাদি) বিকাশ ঘটানো’ হবে। মূলত শিক্ষাসংক্রান্ত শেখ হাসিনার ভাবনার বাস্তবায়নই হচ্ছে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০।
৩.
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়। ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশের প্রথম সরকার কর্মকা- শুরু করে। এখন ২০১৯ সাল। এই দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় বাংলাদেশের আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে; পাল্টে গেছে শিক্ষা-সংস্কৃতি; নতুনরূপে আবির্ভূত হয়েছে মানুষের চিন্তাচেতনা। পাকিস্তান আমলে শাসকগোষ্ঠী শিক্ষা পদ্ধতি ও শিক্ষাব্যবস্থায় বৈষম্য তৈরি করেছিল। একাধিক শিক্ষা প্রণালি ছিল তার মূল কারণ। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে ‘কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন’-এ এই দেশে চলমান শিক্ষাক্ষেত্রে নানারূপ বৈষম্যমূলক ব্যবস্থাপনার সমাধানের কথা উল্লেখ করা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হলে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে পাকিস্তানের পুরনো ভূত ভর করে। ১৯৭৩ সালে চারটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গণতান্ত্রিক অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধু যে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন, তারও মৃত্যু ঘটে পঁচাত্তর-পরবর্তী স্বৈরশাসকদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরাসরি হস্তক্ষেপের ফলে। বঙ্গবন্ধুর আমলে শিক্ষকদের সরকারি কর্মচারীর মর্যাদা দেওয়া হয়; ১১ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতির পিতার আদর্শের ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা সরকারের আমলে একটি শিক্ষানীতি প্রণীত হওয়ায় দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। সহস্রাব্দ উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৫ সালের মধ্যে সব শিশুর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার যে কথা বলা হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন করেছে বর্তমান সরকার। আশার কথা, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের আমলে ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের শিক্ষাচিত্র উন্নত হয়েছে। বরিশাল ও চট্টগ্রামের অবস্থা তার পর। সবচেয়ে খারাপ ছিল সিলেট বিভাগের। জেলাওয়ারি হিসাব করলে নারায়ণগঞ্জের অবস্থান সবচেয়ে ওপরে আর সুনামগঞ্জের অবস্থান সবচেয়ে নিচে ছিল। তবে নানামুখী পদক্ষেপের পর সার্বিক বিবেচনায় ১০টি ভালো জেলা হলো নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, ঢাকা, বাগেরহাট, গাজীপুর, নবাবগঞ্জ, ঝিনাইদহ, ফেনী, মানিকগঞ্জ ও রাজশাহী। আর এখনো নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার সুনামগঞ্জ, বান্দরবান, মৌলভীবাজার, সিলেট, খাগড়াছড়ি, হবিগঞ্জ, রাঙ্গামাটি, গাইবান্ধা, শেরপুর ও নেত্রকোনা জেলাকে। এ কথা ঠিক যে, সব এলাকার শিক্ষাচিত্র সমান হওয়ার কথা নয়। ভৌগোলিক ও আর্থসামাজিক অবস্থাও এর জন্য দায়ী। পার্বত্য অঞ্চলে দীর্ঘ বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে যাওয়া কী কষ্টকর, তা ওই এলাকার মানুষ ছাড়া আর কেউ জানে না। আবার সুনামগঞ্জে হাওরের মধ্যে স্কুলে যাওয়ার প্রবণতা কম কারণ ওই যাতায়াত সমস্যা। তাই সমস্যাগুলো সমাধান করতে হলে, এলাকাভিত্তিক ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি নিতে হবে। বিশ্বব্যাংকের সূচক অনুযায়ী যে অঞ্চলের স্কুলের অবস্থা বেশি শোচনীয় সে এলাকার সমস্যা নিরসনকে অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার। এভাবেই প্রাথমিক শিক্ষার সংকট দূর করে সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নে সফলতা আসতে পারে।
মানবজাতির কল্যাণকর, শান্তিপূর্ণ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ সৃষ্টি শিক্ষার মূল লক্ষ্য। অন্যদিকে যথার্থ ও ভারসাম্যময় শিক্ষা পদ্ধতি একটি দেশের অগ্রগতির চালিকাশক্তি। এ জন্য দেশ ও জাতির উন্নয়ন সম্পৃক্ত শিক্ষা ও শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রণীত ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ সহায়তা করছে মানবজাতিকে মঙ্গলময় কর্মকা-ে সংযুক্ত হতে। আধুনিক জীবনে শিক্ষা ব্যতীত কোনো জাতি তার প্রাত্যহিক জীবনও চিন্তা করতে পারে না। শিক্ষাই কেবল তার বেঁচে থাকার প্রক্রিয়াকে সহজতর করে তুলতে পারে। এ জন্য শিক্ষা ও শিক্ষা পদ্ধতির নতুন আবিষ্কার ও প্রয়োগ একটি অন্যতম অনুষঙ্গ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ‘মানুষের অভ্যন্তরের মানুষটিকে পরিচর্যা করে খাঁটি মানুষ বানানোর প্রচেষ্টাই শিক্ষা।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘শিক্ষা হলো, বাইরের প্রকৃতি ও অন্তঃপ্রকৃতির মধ্যে সমন্বয় সাধন।’ মানবশিশুর জন্মের পর থেকে ক্রমাগত এবং অব্যাহত পরিচর্যার মাধ্যমে তার দৈহিক বৃদ্ধি ঘটে। অন্যদিকে নানা সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে তার মানসিক বিকাশ হয়। উন্নত মানসিক বিকাশের ক্রমচর্চার মধ্য দিয়ে নৈতিকতার পরিগঠনের মাধ্যমে আত্মার শুদ্ধি ঘটে। এ জন্য বলা হয়ে থাকে দেহ, মন ও আত্মার সুসামঞ্জস্য বিকাশই শিক্ষা। এক কথায়, পরিপূর্ণ মানবসত্তাকে লালন করে, দেহ, মন ও আত্মার সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে, নিজেকে জাতির উপযোগী, যোগ্য, দক্ষ, সার্থক ও কল্যাণকামী সদস্য হিসেবে গড়ে তোলার নামই শিক্ষা। শিক্ষা মানবজীবনের এক মূল্যবান সম্পদ। এ সম্পদ কখনই খোয়া যায় না বা বিলুপ্ত হয় না। বেঁচে থাকার জন্য, নিজেকে অভিযোজিত করার লক্ষ্যে শিক্ষা অপরিহার্য।
শিক্ষার অপরিহার্যতার দিকে লক্ষ রেখেই ২০১০ সালে একটি যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণীত হয়েছে এবং তা বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রাথমিক স্তরে শতভাগ শিশুর ভর্তি, প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত প্রতিবছর বিনা মূল্যে বই বিতরণ, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পাবলিক পরীক্ষার প্রবর্তন, ঝরে পড়ার হার হ্রাস, ছাত্রীদের অনুপাত বৃদ্ধি এবং প্রাথমিকে ৭৮ লাখ ৭০ হাজার ১২৯ জন, মাধ্যমিক স্তরে ৪০ লাখ ও উচ্চ মাধ্যমিক থেকে ডিগ্রি পর্যন্ত ১ লাখ ৩৩ হাজার শিক্ষার্থীর সরকারি বৃত্তি পাওয়া প্রভৃতি শিক্ষাক্ষেত্রে যুগান্তকারী অগ্রগতির স্বাক্ষর। ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ এবং ১ লাখ ৩ হাজার ৮৪৫ শিক্ষক-শিক্ষয়িত্রীর চাকরি সরকারীকরণ করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষকদের পদমর্যাদা, বেতন-ভাতা, ট্রেনিং ও দক্ষতা বাড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশের প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যায়ক্রমে মাল্টিমিডিয়া ও ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান, কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠা, প্রতি উপজেলায় একটি করে বিদ্যালয়কে মডেল বিদ্যালয়ে পরিণত করার কার্যক্রম চলছে। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন, ভর্তি পরীক্ষা, পরীক্ষার ফল প্রকাশ প্রভৃতি কার্যক্রম জনগণের প্রশংসা অর্জন করেছে। আমাদের জাতীয় উন্নয়নে শিক্ষা পালন করছে নিয়ামক ভূমিকা। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বর্তমান শিক্ষানীতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং শিক্ষা খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ বৃদ্ধি করার চিন্তাভাবনা চলছে। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর আলোকে দেশে একটি শিক্ষা আইনের-২০১৩ খসড়া প্রণীত হয়েছে। এর ৫১ (১) ধারায় গাইড বই, নোটবই, শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন ও কোচিং বাণিজ্য বন্ধে উদ্যোগ এবং এ ক্ষেত্রে আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। ৫৫ (১) ধারায় বলা হয়েছে, শিক্ষকদের যথাযথ বেতন-ভাতা ও মর্যাদা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। ২০১৩-এর এই শিক্ষা আইনটিও বাস্তবায়ন হয়েছে।
৪.
দেশ এগিয়ে চলেছে শিক্ষাবান্ধব সরকারকে সঙ্গে নিয়ে। চলতি অর্থবছরে শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেট হলো জিডিপির ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ অর্থাৎ ৮৭ হাজার ৬২০ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। মূলত শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শিক্ষাক্ষেত্রকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। বিনা মূল্যে বই প্রদান, যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষকদের জীবনযাত্রার মান অনুযায়ী চমৎকার বেতন কাঠামো প্রদান, কোচিং বাণিজ্য বন্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ, আধুনিক ও ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা সর্বত্র চালুকরণ, শহরের পাশাপাশি গ্রামের স্কুলগুলোতেও সমান সুযোগ তৈরি উল্লেখযোগ্য অবদান এই সরকারের। আর এসব কারণে এবার উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা ফলও ‘সন্তোষজনক’।
লেখকঃ ড. মিল্টন বিশ্বাস, অধ্যাপক এবং পরিচালক, জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
লেখার মূল লিঙ্কঃ দৈনিক আমাদের সময়